Thursday, March 3, 2016

মুক্তি সন্ধানে

কি ভাবে কাটাবেন ? আপনার বৃদ্ধ জীবন ।

                                                         বৃদ্ধাশ্রম 


এক গবেষণায় জানা গেছে ১৯৯৫ সালে । পরিবারের মহিলারা পুরুষ দের তুলনায় অনেক বেশী নিষ্ঠুরতা পান নিজেদের পুত্র ,পুত্রবধূ এবং তার পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে । মানসিক যন্ত্রণা তো আছে তার সঙ্গে নিগ্রহ বাদ পড়ে না ।  পুরুষ ক্ষেত্রে পুত্র , পুত্রবধূ সাথে তার নিজের স্ত্রী ও যোগ দেন ।
সারাক্ষণ ধরে বৃদ্ধ বৃদ্ধা দের ভয়ের বাতাবরণের মধ্যে রাখা হয় । বাড়ি থেকে বার করে ভয় ,সম্পত্তি থাকলে আত্মসাত , খেতে না দেওয়ার ভয় , অসুস্থতায় চিকিৎসা না না করানো । কি শহর কি গ্রাম সর্বত্র একই চিত্র । শুধু তার পরিবার নয় চার পাশের মানুষজন যেন অদ্ভুত উদাসীন ।
শুধুমাত্র মানুষের দুর্ব্যবহার , অবহেলা ,মানসিক বন্ধন কেটে যাওয়া , অর্থাৎ তাদের বাচার ইচ্ছে টা শেষ হয়ে যায় । আর আধুনিক সমাজে তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে মানসিক ও শারীরিক কষ্ট ।
বার্ধক্য ৬০ বছর থেকে এই সময় শরীরে বাসা বাঁধতে থাকে নানা প্রকার অসুখ বিসুখ , এর শরীর চলে অনিবার্য মৃত্যুর দিকে । এক জন মানুষ তার পরিবার ও সমাজের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়  ।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় । তাই এখানে শরীর , মন ও আত্মসন্মান বজায় রাখতে নতুন লড়াই শুরু করতে হবে । আমৃত্যু স্বনির্ভর থাকার কাজ ।
এই সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার নিজস্ব কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠে , হাঁটা চলার ইচ্ছে কমে যায় , হজমে গল্মাল, চুল পড়তে থাকে , হার্টের ক্ষমতা কমে যায় , অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া , ডায়বেতিস ,হাঁটুর সমস্যা । মানুষটিকে নাজেহাল করে তুলে । 
সুস্থতা ও সন্মান নিয়ে বেচে থাকার বাসনা আবহমান কাল থেকে মানুষের মনে । কিন্তু বার্ধক্য নিয়ে আসে দৃষ্টিহীনতা ,বধিরতা ,বাত আর স্মৃতিভ্রংশ । কোষ্ঠ বদ্ধতা আর অনিদ্রা জীবনের বড় সমস্যা হয়ে দাড়ায় । সৌন্দর্য ও লাবন্য মানুষ কে হতাশ করে । বার্ধক্য জীবনের স্বাভাবিক অবস্থা একে পরিপার্শ্বিক অবস্থার মত একে সহজ ভাবে মেনে নিতে হবে । অনেক আগে থেকে তার প্রস্তুতি নিতে হবে ।
কিছু কাজ করতে হবে । বাগান করা, বই পড়া ,ফুল গাছ লাগানো এতে কেটে যাবে সময় ।
তাহলে কি শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ ? না । পজিটিভ চিন্তা ভাবনা রাখতে হবে । কারও নাম ভুলে গেলে লজ্জিত হবেন না । হাঁটা চলা বজায় রাখুন , বাজার জেতে হলে দরকারি জিনিস পত্রের তালিকা তৈরি করুন । মাথার সামনে একটি নোট বই রাখবেন । আগামী কাজ গুলি লিখে রাখবেন তাতে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকবে না ।কিছু ব্যবহার্য জিনিসের নাম আঠা দিয়ে নাম লিখে রাখবেন । সব কিছু অভ্যাস করবেন যাতে নিদিষ্ট জায়গায় যাতে খুজে পান ।মস্তিস্কের চর্চা জরুরি । বই পড়ুন । যৌথ পরিবারে বয়স্ক দের সন্মান ও গুরুত্ব ছিল । ছোট দের নিয়ে তাদের সঙ্গ উপভোগ জীবন বেশ কেটে যেত  । আধুনিক পরিবার নিউক্লিয়াস পরিবার । আক্ষরিক অর্থে ও মানসিক অর্থে ।  এমনিতে এখন মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলামেশা একেবারেই কমে গিয়েছে । এই প্রজন্ম স্বার্থ ছাড়া বয়স্ক দের ধারে কাছে ঘেঁষে না ।
তাই নতুন ভাবে  অবসরের পর এক মহান ব্রত নিয়ে কাজ শুরু করার আমার এক পরিকল্পনা আর স্বপ্ন আছে । তাই আসুন আমরা নতুন ভাবনা ,নতুন দৃষ্টিভঙ্গী , নতুন সংকল্প নিয়ে নতুন প্রেরনা নিয়ে আমি এগিয়ে যেতে চাই ।
এটা সত্য , পরিবারে ও সমাজে অনেকে আমাকে অঘাত দিয়েছে আবার অনেকে দেবতার মত শ্রদ্ধা করেছে । সুখ দুঃখ নিয়ে কেটেছে আমার জীবন । সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে এতদিন সঠিক লক্ষ্য স্থির করে আমার স্বপ্নের বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলতে চাই । এতদিন যা হবার হয়ে গেছে । বিগত দিনে যারা যন্ত্রণা ব্যাথা দিয়েছে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা তাদের ক্ষমা কর তুমি ।
হে ভগবান যারা আমাকে দুঃখ দিয়েছে যন্ত্রণা দিয়েছে তাদের তুমি মঙ্গল কর এটাই আমার প্রার্থনা ।
আমার লক্ষ্য বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলা । 

No comments:

Post a Comment