Wednesday, March 2, 2016




জাননগর আমার জন্মভুমি । এই খানে আমি জন্মেছি । এখানে প্রাথমিক স্কুলে আমার হয়েছে শিক্ষার হাতে খড়ি । এখানকার হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি । স্কুলে প্রধান শিক্ষক গোবর্ধন লাল সিংহ । বাবার সহপাঠি স্বাভাবিক ভাবে স্কুলে শিক্ষক দের স্নেহের হাত আমার উপর ছিল । আজ সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমার সহপাঠি । আরেক সহপাঠি বহরমপুর কে এন কলেজের অধ্যাপক । আমাদের স্কুলের করণিক ওয়াহেদ আলি অবসর গ্রহণ করেছে । তার সাথে মিলে রতুয়ার বুকে কমিউনিস্ট পারটি [মার্ক্সবাদী ] গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিয়োগ করেছিলাম আর সেই সময় আমার আদর্শ ছিল মানিক ঝা । জীবন মৈত্র বিশ্বনাথ ঘোষ শইলেন সরকার এর নেতৃত্বে আমি 'ও্যাহেদ আলি , সামসুদ্দিন দা মিলে ১৯৬৬ সালে কেরোসিন ও খাদ্য আন্দোলন গড়ে তুললাম । ১৯৭০ দীনেশ মজুমদার এলেন বাহারালে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের কমিটি তৈরি করে দিলেন । ১৯৭৩ সালে রতুয়ার সামসি তে উত্তর বঙ্গ রাজনৈতিক শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত হল । পুরো কর্মসূচি সংগঠিত করা ও প্রচার করার দায়িত্ব শইলেন সরকার আমাদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন । প্রকাশ্য সভার মধ্য দিয়ে শিবিরের কাজ শুরু হয় । প্রকাশ্য সভায় প্রধান বক্তা জ্যোতি বসু আর জ্যোতি ভট্টাচার্য । শিবিরে শিক্ষক হিসাবে চার দিন ছিলেন সুধাংশু দাসগুপ্ত ,প্রমোদ দাসগুপ্ত, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য , সুভাষ চক্রবর্তী । তারা সেই শিবিরের অভিজ্ঞতার কথা সেই সময় দেশহিতৈশি পত্রিকা তাদের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন । আর আমার অভিজ্ঞতা সুভাষ চক্রবর্তী সামসি হাট শিবিরের জায়গা ৫ কিমি সমস্ত প্রতিনিধিদের নিয়ে উই শাল ওভার কাম গাইতে গাইতে সম্মেলন স্থলে গিয়েছিলেন । এটা তাকে হিরো বানিয়ে দিয়েছিল আমার কাছে । যদিও একবার ভাদ তে তার সাথে এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল । এখানে একটা কথা আমার জীবনে স্মরণীয় আছে রতুয়ার ঈদগাহ ময়দানে আধা ফাস্যিবাদি সন্ত্রাস এর বিরুদ্ধে ,কংগ্রেস নেতা গৌতম চক্রবর্তী র সন্ত্রাসের মালদা উত্তাল হয়ে উঠেছিল । ইন্দ্রিরা গান্ধী ও সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের বিরুদ্ধে সেদিন একাকার হয়ে গিয়েছিল জনসঙ্ঘ , সংগঠন কংগ্রেস আর বামপন্থী দল গুলি । জ্যোতি বসু এই সভার বক্তা । স্থানীয় বক্তা হিসাবে আমি এই সভার বক্তা ছিলাম । বিশু মৈত্র, পশুপতি ঝা মানিক ঝা , গোলাম ইয়াজদানি প্রভৃতি তৎকালীন জেলার নেতারা । এই আন্দোলন রাজ্য স্তরে ভালই প্রভাব ফেলেছিল । প্রমোদ দাসগুপ্ত নন্দন প্ত্রিকা এই লড়াই কে রাজ্যের গনতান্ত্রিক আন্দোলনে একটা মাইল স্টোন হিসাবে চিহ্নিত করেছিলে । সমসাময়িক সময়ে রাজ্য কৃষক সম্মেলন মালদা শহরে অনুষ্ঠিত হয় সেখানে পি সুন্দ্রাইয়া , হরেকৃষ্ণ কোঙার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন । সম্মেলনের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে তাদের কাছাকাছি আসার সুযোগ আমার হয়েছিল । তাদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছিল ।
তারপর একদিন জাননগর ছেড়ে দুর্গাপুরে পাড়ি দিলাম ।

No comments:

Post a Comment